শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলা

চ্যানেল নিউজ, ঢাকা : কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মিরপুরে মো. সিফাত হোসেন (২৬) নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ২৩ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর তার বিরুদ্ধে ঢাকায় দায়ের করা ষষ্ঠ মামলা এটি। এর মধ্যে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) একটি হত্যা ও বুধবার (১৪ আগস্ট) দুইটি ও বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) তিনটি মামলা করা হয়। এ ছয়টির মধ্যে পাঁচটি হত্যা ও একটি গুম-অপহরণ মামলা।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী-আল ফারাবী এ মামলার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

এর আগ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার। এসময় আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মিরপুর মডেল থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। শুক্রবার মিরপুর মডেল থানা মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আদালতে নথি পাঠায়।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম জাহিদ, স্বপন বেপারী, আলমগীর, যুবলীগ নেতা মাহবুব, সরোয়ার হোসেন, রেজাউল হক ভূঁইয়া বাহার, রুহুল আমিন, হুমায়ুন রশিদ জহির, সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন বিপুল, জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা-১৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার, মো. জিয়া, মো. জামান মিয়া, মো. মেহেদী হাসানসহ অজ্ঞাতনামা অনেকে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২০ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর, ৯৮ সেনপাড়া এম এস পাওয়ারের সম্মুখে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা কোটা সংস্কার আন্দোলন করছিলেন। সেই আন্দোলনে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। ঠিক সে সময় সিফাত হোসেন রাস্তা পার হয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সময় গুলি বিদ্ধ হয়ে মারা যায়। বুলেট তার মাথার এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ভিকটিমকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে মো. সিফাত হোসেন মারা গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ।

মামলার অভিযোগে বাদী আরও উল্লেখ করেন, পরবর্তীতে বাদী তার সন্তানের মরদেহ মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার চরপালরদী গ্রামে নিজ বাড়িতে দাফন করেন। ছাত্র-জনতার নেওয়া যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল। কোনো ধরনের উসকানি ছাড়া পুলিশ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী একত্রিত হয়ে ছাত্র-জনতার ওপরে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়, যাদের ভেতরে সিফাতও একজন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

themesbazartvsite-01713478536