৫০ কোটির দুষ্প্রাপ্য মুখোশ মাত্র ১৮০০ টাকায় বিক্রি!

৫০ কোটির দুষ্প্রাপ্য মুখোশ মাত্র ১৮০০ টাকায় বিক্রি!

চ্যানেল নিউজ, ঢাকা : বাংফ্রান্সে মাত্র ১৫০ ইউরোতে দুষ্প্রাপ্য একটি মুখোশ পুরোনো মালপত্রের ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন এক বৃদ্ধ দম্পতি। পরে তারা জানতে পারেন ওই মুখোশটির দাম কম করে হলেও ৪২ লাখ ইউরো। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫০ কোটি টাকারও বেশি। খবর বিবিসির।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মুখোশটির প্রকৃত মূল্য সম্পর্কে জানতে পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঐ বৃদ্ধ দম্পতি। আদালতে তারা যুক্তি দিয়েছেন, ভুল করেই বহুমূল্যবান ওই মুখোশটি তারা কম দামে বেচেছেন। তবে বিচারক তাদের সঙ্গে একমত হননি। তিনি বলেছেন—বৃদ্ধ ঐ দম্পতি শিল্পকর্মটির সত্যিকার মূল্য উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আফ্রিকার দেশ গ্যাবনের ফ্যাঙ সম্প্রদায়ের মানুষদের তৈরি ‘এনগিল মুখোশ’ পৃথিবীতে মাত্র ১০টি আছে বলে বিশ্বাস করা হয়। জানা যায়, এটা পরিধান করতেন ‘এনগিল’ নামে একটি গোপন সংগঠনের সদস্যরা। ইতিহাসবিদদের মতে, ওই সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন গ্রামে কালা-জাদুকর এবং সমস্যা সৃষ্টিকারীদের খোঁজে ঘুরে বেড়াতেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উনিশ শতকে কাঠ দিয়ে নির্মিত ওই মুখোশগুলোরই একটি ১৯১৭ সালে কোনো অজানা পরিস্থিতিতে ফরাসি ঔপনিবেশিক গভর্নর রেনে-ভিক্টর অ্যাডওয়ার্ড মরিস ফোর্নিয়ার সংগ্রহ করেছিলেন। মূলত তারই নাতি বহু মূল্যবান এই মুখোশটি নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছেন। পরে পুরোনো মালপত্রের ঐ ব্যবসায়ী নিলামে অজানা এক ক্রেতার কাছে মুখোশটি বিক্রি করে দিয়েছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে নিলাম মূল্যের একটি অংশ দাবি করতে আদালতে যান ফরাসি দম্পতি। তারা অভিযোগ করেন, পুরোনো মালপত্রের ব্যবসায়ী মুখোশটির প্রকৃত মূল্য সম্পর্কে তাদের বিভ্রান্ত করেছেন।
তবে ঐ ব্যবসায়ী দাবি করেন, তিনি মুখোশটির প্রকৃত মূল্য সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। শুধু তাই নয়, মুখোশটিকে বিপুল দামে বিক্রি করার পর তিনি হতভাগ্য ওই দম্পতিকে ৩ লাখ ইউরো দেওয়ারও সদিচ্ছা পোষণ করেছিলেন। যদিও পরে তার বিরুদ্ধে মামলা করার পর তিনি প্রস্তাব ফিরিয়ে নেন।
বিচারক শেষ পর্যন্ত পুরোনো মালপত্রের ব্যবসায়ীর পক্ষেই রায় দিয়েছেন এবং বলেছেন—অভিযোগকারী দম্পতি মুখোশটির ঐতিহাসিক এবং শৈল্পিক মূল্যের মূল্যায়নে যথাযথ পরিশ্রম করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এদিকে গ্যাবন কর্তৃপক্ষ মুখোশটিকে নিজেদের সম্পদ দাবি করে এটির বিক্রি বন্ধের অনুরোধ করেছিল। তবে আদালত সেই অনুরোধও খারিজ করে দেয়। কারণ রেনে-ভিক্টর অ্যাডওয়ার্ড মরিস ফোর্নিয়ার যখন মুখোশটি অধিগ্রহণ করেছিলেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গ্যাবন তখন একটি ফরাসি উপনিবেশ ছিল।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

themesbazartvsite-01713478536